করোনার দিনগুলিতে(মার্চ ২১, ২০২০)
![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiOK_REfJkworBbEpImLQhSEqeg3lIUaxzQPr5ox4_b4GsGcaFri4Y8c6O_3diyJR0GMDQ4Zl8rLMPR9wc2VtKGmqjq1wwNUyq-E_dcPFa2IFRQFLTiielAOth4v3w87bvq6Ow8Q3BgFQ0/s640/IMG_20200214_210625.jpg)
আজকে শনিবার। শনিবার ঢাকা এমনিতেই ফাঁকা থাকে। এদিন সকালে আধঘন্টা বেশী ঘুমিয়ে তারপর অফিসের পথে রওনা হওয়া যায়। আজকে প্রায় চল্লিশ মিনিট বেশী ঘুমিয়েছি। ঢাকা একেবারে ফাঁকা। একদম ঈদের মতো। পার্থক্য হচ্ছে ঈদের সময় এত থমথমে থাকে না।
সকাল বেলা এপিবিএন এর পাশে এক বৃদ্ধ ভিক্ষুক কে দেখলাম কেমন উদাস হয়ে বসে আছে। এর টাকা পয়সা কামাই হয় না বেশী হয়তোবা। কে দিবে, মানুষই নেই। যাও আছে কোনোমতে একজন আরেকজনকে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে পারলেই বাঁচে। কে যে মানব বোম্ব হয়ে আছে কে জানে। এক ভয়াবহ অনুভূতি।
জসিমউদদীন থেকে বনানী যেতে একঘন্টা হাতে নিয়ে বের হই। আজকে পনের মিনিটে গন্তব্যে পৌঁছে গিয়েছি। খিলক্ষেত যেখানে মানুষের জন্য হেলপার দরজা খুলতে চায় না, সেখানে কেউ নেই। এমইএস এর রেডিসন হোটেল দাম্ভিক এক মরুপ্রান্তর যেন। এত বিলাসিতা, কিন্তু মানুষ নেই। কি হবে এই বিলাসিতার? জানা নেই।
বানানী ওভারপাসের আগে সাতটা স্তম্ভ যেন অবাক হয়ে শহরটাকে দেখছে। ভাবছে এত কিসের হাহাকার।
সমস্ত বিশ্ব আজ থমথমে। মানুষ বের হয় না। আমাদের ম্যাক্সিমাম মানুষের মধ্যে আজো বিকার নেই। একজন মারা গিয়েছে মিরপুরে। একটা বাসা লকড ডাউন। মানুষজন দেখলাম সেই বাসা দেখতে ভীড় জমিয়েছে। আমাদের বড্ড কৌতুহল। আমরা কি মৃত্যুকে ভয় পাই না? নাকি এর ভয়াবহতা আমাদের স্পর্শ করতে পারে না? বোধহয় পাশের এবং কাছের কেউ মারা না যাওয়া পর্যন্ত আমাদের মনে হয়, কিছু হবে না।
আমাদের ব্যবস্থাপনা এত ত্রুটিপূর্ণ, আমাদের এত অভাব। কিভাবে সামাল দিবো কে জানে। হয়তো এই লেখাগুলোই শেষ লিখা হবে। হয়তো কোনো হাসপাতালের বারান্দায় নিঃশ্বাসে অক্সিজেন নিতে না পেরে হারিয়ে যাবো প্রিয়মুখগুলো আর দেখা হবে না। কে জানে, আগামীদিনের কথা কে জানে। সূর্য উঠে সব ঝলমল করে তবু দিনটা কেমন পানসে হয়ে থাকে।
যে যেখানে আছেন সাবধানে থাকবেন। নিজের জন্য না হোক, প্রিয় মানুষগুলোর জন্য হলেও সাবধানে থাকুন। দরকার না হলে, বন্দি হয়ে পরুন।
শুভ রাত্রি।
কোন মন্তব্য নেই